শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন
মিজবাহ উদ্দীন আরজু, মহেশখালী :
কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নে দাদন টাকার জেরে মামার হাতে ভাগিনা খুন হয়েছে। মূলত মাছধরা ট্রলারে সুদ হিসেবে দাদনের টাকা দেওয়া নেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মোহাম্মদ কাছিম আলী (৩৫) নামের এ জেলেকে বাড়িতে ঢুকে কুপিয়ে খুন করা হয়। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ২৩ এপ্রিল (বুধবার) দুপুর ১২ টায় স্থানীয় কবির বাজারে।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দারা জানান- কুতুবজোম ইউনিয়নের কামিতার পাড়া এলাকার বাসিন্দা নুরুল আলম প্রকাশ কালা মিয়ার পুত্র নিহত মোহাম্মদ কাছিম আলী পেশায় একজন জেলে, তার সাথে তার মামা মোহাম্মদ আব্দুল গফুর ও তার সন্তানদের সাথে মাছধরা ট্রলারের দাদনের ঋণ নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এ বিরোধের জের ধরে সকালে স্থানীয় কবির বাজার এলাকায় দুইজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় কাছিম আলি তার মামা গফুরকে অনেকটা হেনস্তা করেন। উপস্থিত লোকজন তাদেরকে বাকবিতন্ডা থেকে নিবারন করলে যে যার মতো চলে যায়।
পরে দুপুর ১২টার দিকে মোহাম্মদ কাছিম আলী কবির বাজারে আসেন, এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মামা আব্দুল গফুর ও তার সন্তানরা জেলে কাছিম আলীকে ধাওয়া করে। তিনি প্রাণভয়ে দৌড়ে নিজের বাড়িতে ঢুকে গিয়ে ভেতর থেকে দরোজা বন্ধ করে দেন। এ সময় বেশ কয়েকজন নারীসহ গফুর ও তার সন্তানরা দরোজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে কুপিয়ে আহত করে দ্রুত স্থানত্যাগ করে। পরে স্থানীয়রা কাছিম আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরে তাকে হাসপাতালে আনা হয়।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে মহেশখালী হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
নিহত কাছিম আলীর মা রাশেদা বেগম জানান- গফুর ও তার সন্তান কামরুল হাসান, সাহেদ খান, সারজিদ আলম, ইরফান, সুফিয়া ও শামীমাসহ কয়েকজন নারী বাড়িতে ঢুকে তার ছেলেকে ঘিরে ধরে। তারা পিটিয়ে ও দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে কাছিম আলীকে গুরুতর আহত করে বাড়ি ত্যাগ করে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে তিনি দাবি করেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি- ঘাতক গফুর ও তার পরিবারের সদস্যরা এলাকায় বেশ দুর্দষ প্রকৃতির। তাদের উশৃঙ্খল আচরণে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। আগেও বিভিন্ন জেলেকে মারধরের করেছে তারা।
নিহত কাছিম আলী স্থানীয় নুরুল আলম প্রকাশ কালা মিয়ার পুত্র। সংসারে স্ত্রী ছাড়াও তার রয়েছে দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
পুলিশের দুইটি টিম হাসপাতাল ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হাসপাতাল থেকে মরদেহের ছুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেছে পুলিশ।
এদিকে ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ লোকজন গফুরের বাড়ি ভাঙচুর করেছে এবং তারা এলাকাছাড়া রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে মহেশখালী থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. কায়ছার হামিদ জানিয়েছেন- ঘটনার পরপরই পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে, খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে, পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে