শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০২ পূর্বাহ্ন
ভূরুঙ্গামারী, প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থেকে দীর্ঘ ৭ মাস পর নিখোঁজ হওয়া ফরিদাকে ফিরে পেলেন মুন্সিগঞ্জ জেলার তার পরিবার।
জানা যায়, মোঃ মাইদুল ইসলাম নামের এক সচেতন নাগরিক ১৩ ফেব্রুয়ারী (বৃহস্পতিবার) রাত্রে ভূরুঙ্গামারী জামতলা মোড়ে পাগল অবস্থায় এক মহিলাকে দেখতে পেয়ে তার তথ্য নিয়ে ভিডিও ধারন করেন এবং তার Midul Islam Sohan ও আইন কানুন পেজে আপলোড করেন।
মাইদুল জানায়, রাস্তায় কোন পাগল কিংবা পাগলি তারা কারো মা-বাবা বা কারো ঘনিষ্টজন। সে দিক থেকে চিন্তা করে তার সাথে কথা বলে তার কাছে নাম ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার নাম ফরিদা ইয়াসমিন, বাড়ি আড়ালিয়া গ্রামের গজারিয়া থানার মুন্সিগঞ্জ জেলায়। অত:পর তিনি উপজেলা নির্বাহি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। তিনি হাসপাতালে মহিলাটির চিকিৎসা ও সার্বিক খোঁজ খবর রাখেন। পাশাপাশি তার পরিবারের সাথে যোগাযোগের জন্য গজারিয়া থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করে ভিডিও লিংকটি পাঠিয়ে দেন এবং মহিলার পরিবারের সাথে যোগযোগ করার জন্য অনুরোধ করেন। পরের দিন ১৪ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান মাইদুলের সাথে যোগাযোগ করেন এবং তার পরিবারের সন্ধান দেন।
তার দুই ছেলে মোঃ আনিস ও মোঃ ফরহাদ হোসেন এবং ছেলের স্ত্রী ও চাচা এবং ভাতিজা মিলে চলে আসেন ভূরুঙ্গামারীতে। হাসপাতালে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। এ দৃশ্য দেখে হাসপাতালের চিকিৎসারত রোগীরাও কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। তারা বলেন মাইদুল ভাই অচেনা একজন মানুষের সেবা করেছে এবং যোগাযোগ করে তার পরিবারের সন্ধান পেয়েছে এ জন্য সকলে তার জন্য দোয়া করেন। মহিলাটি হাসপালে থাকাবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত ও বিভিন্ন দোয়া দরুদ পাঠ করে সবাইকে আকর্ষনীয় করে তুলেন।
তার পরিবারের ছেলে ও অন্যান্য সদস্যরা জানান, তিনি দীর্ঘ ৭ মাস পূর্বে মানষিক সমস্যার জন্য হারিয়ে যায়। তাকে অনেক খোঁজাখুজি করলেও কোন সন্ধান পাইনি। পত্রিকায় এবং ফেসবুকে অনেক লেখালেখি করেও কোন খোজ পাওয়া যায় নাই। পরে গজারিয়া থানার ওসির মাধ্যমে বিস্তারিত জানতে পারি একজন মহিলা ভূরুঙ্গামারীতে পাওয়া গেছে। অত:পর ভিডিও দেখে নিশ্চিত হয়ে মাইদুল ভাই এর সাথে যোগাযোগ করে নিতে এসেছি। এ ঋণ কোন দিনও ভোলা যাবে না। এখন থেকে তিনি আমাদের পরিবারের অংশ হয়েছেন। ফরিদা বেগম এই প্রথম হারিয়ে যায় তবে ভবিষ্যতে কখনো হারিয়ে গেলে কোথাও তাকে দেখলে গজারিয়া থানায় যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেন।
আল্লাহর অশেষ রহমতে একজন মা তার সন্তান ও পরিবার ফিরে পেয়েছে এজন্য লক্ষ কোটি শুকরিয়া। প্রতিটি মানুষের কাছে অনুরোধ, রাস্তায় কোন পাগল-পাগলি দেখলে তার পরিবারের সন্ধান নিয়ে পরিবারের কাছে ফিরে দিতে সহায়তা করা।